স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে জীবন্ত পোস্টার হয়ে রাজপথে নেমে এসেছিলেন যুবলীগ কর্মী নূর হোসেন। তার বুকে-পিঠে লেখা ছিল ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’ এই জ্বলন্ত স্লোগান। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে শহীদ নূর হোসেন।
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর ১৫ দল, সাত দল ও পাঁচ দলের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি ছিল। সেই কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্রসংগঠনগুলোর সমর্থনে অবস্থান ধর্মঘট ঘেরাও কর্মসূচিতে রূপ লাভ করে। স্বৈরশাসকের সব বাধা উপেক্ষা করে ১০ নভেম্বর সকাল থেকেই সচিবালয়ের চারদিকে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার মিছিল সমবেত হয়। তখন তোপখানা রোডের মুখে পুলিশ বক্স পেরিয়ে শুরু হয় নূর হোসেনদের সাহসী মিছিল। সাহসী এই যুবক উদাম গায়ে লিখেছিলেন ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক/স্বৈরাচার নিপাত যাক’।
সমাবেশ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। পল্টন তখন রণক্ষেত্র। এরই মধ্যে খবর আসে, পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছেন নূর হোসেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য। নূর হোসেন আত্মদানের মাধ্যমে সেদিন গণতন্ত্রের নতুন সংগ্রাম শুরু হয়। সেই সংগ্রামের ধারায় ১৯৯০ সালের ৪ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী শাসক পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
১৯৬১ সালে বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন নূর হোসেন। জীবিকার সন্ধানে রাজধানীর পুরনো ঢাকার বনগ্রামে পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। তার বাবা মজিবুর রহমান পেশায় ছিলেন একজন বেবিট্যাক্সি চালক। মা মরিয়ম বেগম ছিলেন গৃহিণী। নূর নিজেও ছিলেন একজন পরিবহন শ্রমিক। একই সঙ্গে যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন।
সম্পাদনা:আরএইচ/এমএই







