এক.
স্মৃতির নকশীকাঁথা
এ যাত্রায় হয়তোবা বেঁচে গেছি
পকেটে পুরেছি বিজয়ের শৌর্যগাথা।
আজও পারিজাত বনে প্রসন্ন বাতাসে
সুর তোলে দলছুট কিছু বেভুল পাখি।
এ শহরের দেয়ালে দেয়ালে
লিখে যেতে চাই কালের এলিজি,
পাড়ান্তরের আঁধার কোনে
মেখে যাবো কিছু রৌদ্রের রঙ।
ভালোবাসা নিলামে দিলাম পরম্পরার হাটে;
শিউলি ঝরা অনাগত ভোরে যদি কেউ
এপিটাফে দীর্ঘশ্বাসে দুটো ফুল ছোঁড়ে
দুহাতে লুফে নেবো নিলামের দাম।
যদি উড়ে যায় বেখেয়ালি পাখি
পড়ে থাকে তার ফেলে যাওয়া পালক…
স্মৃতির নকশীকাঁথা বুনে যাবো সময়ের অসুখে।
দুই.
একটি কবিতা
মগজবিহীন করোটিতে কবিতার গেরস্থি হয়না,
হাওয়ায় দোলা বাবুইনীড়ে হৃদয় দোলে খামোকা।
পায়ের কাছে লুটোপুটি খাওয়া সরীসৃপ শব্দমালা
ঘাসফুল ক্যামেলিয়ার মত কাছে টানে মদিরায়।
অথচ একটাও কবিতা লেখা হয়না আজকাল।
কাব্যালোকে রোজই ভাসে কৃষ্ণবাঁশির সুর,
ফুল পাখি নদী নারী আর নিসর্গবন্দনা।
নিপীড়নবিরোধী বর্ণমালায় ভয়ের পেরেক
ক্রুশবিদ্ধ যিশু হয়ে হলিক্রস এঁকে দেয়।
সত্যোপলব্ধির শব্দমালা কতটা ভয়ঙ্কর সুন্দর
বোধেরা সে খবর রাখেনা ইদানিং।
মোসাহেব জানে শুধু জো হুকুম জাঁহাপনা,
তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে বানরের উপরে ওঠার
কসরত চলে নিউরনে নিয়ত ।
বুক পকেটের কলমটি হতে পারতো
শমসের গাজীর শৌর্যমাখা তলোয়ার।
সে এক খাঁচায় পোষা তোতাপাখি
কেবলই শেখানো বুলি আওড়ায়।
একটি কবিতা- একটি দেশলাই কাঠি,
একটি ছাড়পত্র,একজন সুকান্ত।
একটি কবিতা-একটি অগ্নিবীণা, বিদ্রোহী নজরুল।
একটি কবিতা- একজন কৃষ্ণাঙ্গ কবি মোলাইস,
‘নকোশি সিকলেই আফ্রিকা’ বলে
ফাঁসির মঞ্চে ঝুলে থাকা বিপ্লবী বীর।
একটি কবিতা- একটি তর্জনী, একটি বাংলাদেশ।
তিন.
বায়স্কোপে দৃশ্য ভাসে
বেশ্যারা হাতে হাতে বদলায়,
প্রলেতারিয়েত নৈতিকতা ঘাটে ঘাটে দোলখায় ;
খুঁজে নেয় সিন্দবাদের বাণিজ্যতরি।
জননীর কল্কাপাড়ের সোহাগ,
ফসলের মাঠে বন্ধকি ক্ষুধা রেখে
স্বপ্নের উড়াল যাত্রা আমাদের…
রেমিট্যান্সযোদ্ধার গর্বিত অর্জন
ওরা বেচে দেয় অনায়াসে!
ওদের কি বলে?
অথচ দেহ বেচে নাকি বেশ্যা হয়।
টেবিলে টেবিলে চেতনাভুক
নৈতিকতা বিক্রেতারা কি?
সবকিছু বেশ্যাদের করপুটে…
ইদানিং বায়স্কোপে দৃশ্য ভাসে
ডাকে পিউ পাপিয়া…
দ্রৌপদী সাবরিনায় পুড়ে গলে যাবেনাতো জিঞ্জির?
মাঝেমধ্যে নাটাইয়ে টান পড়ে
মাটিতে নেমে আসে ঢাউস সাহেদি ঘুড়ি…