নিজস্ব প্রতিনিধি >>
মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন ১০ বছরের আমেনা আক্তার। শনিবার রাতে শরীরের যন্ত্রনা নিয়ে শহরের ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মূল তথ্য বেরিয়ে আসে। এদিকে ঘটনার পর থেকে গৃহকর্তী আফরোজা পলাতক রয়েছে।
নির্যাতিতা আমেনা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, টুনি নামের এক মহিলার মাধ্যমে চলতি বছরের শুরুর দিকে ফেনী শহরের নুরিয়া মসজিদ সংলগ্ন আফরোজা ম্যানশনে কাজ নেয় আমেনা বেগম (১০)। কিছুদিন পর সেখান থেকে আমেনাকে ঢাকায় তার ননদের বাসায় পাঠিয়ে দেন আফরোজা। সেখানে অমানুষিক পরিশ্রম ও নির্যাতনের শিকার হন আমেনা। এক পর্যায়ে তাকে চুলার আগুন নিয়ে তার শরীরের পিছনের অংশ ঝলসে দেয়া হয়। অসুস্থ্য আমেনাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা করিয়ে ক্ষত কিছুটা সেরে গেলে পুনরায় তাকে ফেনীর আফরোজা ম্যানশনে পাঠিয়ে দেয় ওই গৃহকর্তী। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে আফরোজা আক্তার গৃহকর্মী আমেনার শরীর ঢাকা দিয়ে কয়েকদিন বাসায় রাখলেও শনিবার মধ্যরাতে তাকে বাসা থেকে বের করে দেয়। সারারাত ফেনী রেলওয়ে স্টেশনসহ বেশ কয়েকটি স্থানে ঘুরে শহরের তাকিয়া রোড় এলাকায় কাদতে দেখে স্থানীয় মিজানুর রহমান তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাসায় নিয়ে যান। পরে তার অবস্থা দেখে আধুনিক ফেনী সদর হাসাপতালে ভর্তি করায়। ঘটনার পর থেকে গৃহকর্তা সামছু মিয়ার ও তার স্ত্রী আফরোজা আক্তার পলাতক রয়েছে।
জানা যায়, আবুল কালাম ও শফালী বেগমের বড় মেয়ে আমেনা আক্তার। তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে শেপালী অন্য একজনকে বিয়ে করে চট্টগ্রামে অবস্থান করছে।
ফেনী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: অসিম কুমার সাহা জানায়, আমেনা বেগমের চিকিৎসার সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তার শরীরের ক্ষত কয়েক মাস আগের হওয়ায় এসব স্থানে ইনফেকশ হয়ে গেছে। তার শরীরের অবস্থা এখন নাজুক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) উক্য সিং জানান, গৃহকর্তী আফরোজাসহ জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সম্পাদনা: আরএইচ