অবশেষে গুজবেই পরিসমাপ্তি ঘটল জিয়াদ নাটকের। শুক্রবার বিকাল তিনটা থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের অভিযানের পর রাত সাড়ে তিনটার দিকে বিষয়টি গুজব বলে মন্তব্য করেন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, পাইপের ভেতর কোনো শিশু পাওয়া যায়নি। ন্যাশনাল সিকিউরিটিজ ইন্টেলিজেন্সের (এনএসআই) যুগ্ম পরিচালক আবু সাঈদ পাইপে শিশু পড়ে যাওয়ার বিষয়টিকে শুধুই গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। শিশুটিকে পড়ে যেতেও কেউ দেখেননি।
দুই শিশু পাইপের ভেতর প্রথম কান্নার শব্দ শুনে পাড়া-প্রতিবেশীকে ডেকে আনার কথা বললেও জিয়াদের মা সাংবাদিকদের জানান, এক প্রতিবেশী নারী নাকি তিনতলা থেকে শিশুকে পড়ে যেতে দেখে তাকে বাসায় এসে খবর দিয়ে গেছেন।
তবে শব্দ পাওয়া এবং জুস খাওয়ার কথা বলেছিলেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার আলী আহমেদ খান পিএসসি বলেন, ও রকম শব্দ পাওয়া গিয়েছিল। তবে নিচে কিছু আবর্জনা পাওয়া গেছে। তেলাপোকা, টিকটিকি ও রশি পাওয়া গেছে। আমরা ওয়াসার অত্যাধুনিক বোরহোল ক্যামেরা দিয়ে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছি।
এখনি কার্যক্রম গুটিয়ে নেবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সর্বশেষ আরেকটু চেষ্টা করব। নিচের জিনিসগুলো বের করে আনার চেষ্টা করব।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের আরও বলেন, এখানে ফায়ার সার্ভিসসহ অন্যান্য উদ্ধারকারীরা আছেন। তারা ৮ ঘণ্টা কাজ করেছেন। যারা এ কাজে পারদর্শী আমরা তাদের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো শিশুকে পাওয়া যায়নি। ওখানে কিছু কীটপতঙ্গ আছে। ওখানে আবর্জনা আছে। তার মানে ওখানে অক্সিজেন আছে। আমরা ওখানে জীবিত মানুষকে পাইনি। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ঘোষণার পর রাত ২টা ৫০ মিনিটের দিকে উদ্ধারকারী দল পাইপ থেকে ক্যামেরা তুলে নেয়।
জিয়াদ যে পাইপে পড়েছে, সেটি পোঁতা হয়েছে কয়েক মাস আগে। কিন্তু ওই পাইপ দিয়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী পানি না আসায় একটু দূরে বসানো হচ্ছিল একই ধরনের আরেকটি পাইপ। তবে আগের পাইপটি ছিল ঢাকনাহীন।
ইপের ভেতরে শিশু জিয়াদের অবস্থান শনাক্ত করতে রাতে নামানো হয় বিশেষ ক্যামেরা। ক্যামেরাটি সর্বশেষ যতটুকু নিচে নামতে পেরেছে তাতে কোনো মানবশিশুর অস্তিত্ব দেখা যায়নি। রাত আড়াইটার দিকে ওই ক্যামেরা যেখানে গিয়ে আটকেছে সেখানে একটি টিকটিকির নড়াচড়া ধরা পড়েছে।
রাজধানীর শাহজাহানপুরের রেলওয়ে মাঠসংলগ্ন পানির পাম্পের ৬০০ ফুট গভীর একটি পাইপের পড়ে যায় জিয়াদ নামের শিশুটি। এমনটি প্রথম থেকেই বলা হচ্ছিল। যদিও প্রথমে এর গভীরতা ৩০০ ফুট হিসেবেই বলা হচ্ছিল। কিন্তু সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণ ও ন্যাশনাল সিকিউরিটিজ ইন্টেলিজেন্সের (এনএসআই) যুগ্ম পরিচালক আবু সাঈদ এর ভাষ্যমতে দেখা যাচ্ছে সেটা ছিল নিছকই গুজব।