সাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে দশটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিগত নির্বাচন গুলোয় কোন দল সরকার গঠন করেন অথবা কোন রাজনৈতিক দল কত ভোট কিংবা আসন পান সে হিসাব-নিকাশ নিয়ে আমাদের আয়োজন। এ আয়োজনে জাতীয় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, জাতীয় সংসদ সচিবালয়, উইকিপিডিয়া ও বাংলাপিডিয়া থেকে নানা ভাবে সহযোগিতা নেয়া হয়েছে।
প্রথম নির্বাচনে সরকার গঠন করে আ’লীগ
দেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ। নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ৩শ’টি আসনের মধ্যে ২৯৩টি আসনে জয়লাভ করে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ন নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করেন। এ নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১১টি আসনের প্রার্থীরা নির্বাচিত হন। মোট ভোটারের ৫৪.৯ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাদিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচনে জাসদ ১, বাংলাদেশ জাতীয়লীগ ১ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৫টি আসন পান।
নির্বাচনে ৩ কোটি ৫২ লাখ ৫ হাজার ৬শ’ ৪২ জন নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ১ কোটি ৯৩ লাখ ২৯ হাজার ৬শ’ ৮৩ ভোটার। এদের মধ্যে আওয়ামীলীগ ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৮ হাজার ৭শ’ ১৭ ভোট পেয়েছে। শতকরা হিসানে ৭৩.২ শতাংশ। জাতীয় আওয়ামী পার্টি (মাজাফ্ফর) ১৫ লাখ ৬৯ হাজার ২শ’ ৯৯ ভোট। শতকরা হিসাবে ৮.৩ শতাংশ। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ ১২ লাখ ২৯ হাজার ১শ’ ১০ ভোট। শতকরা হিসাবে ৬.৫ শতাংশ। জাতীয় আওয়ামী পার্টি (ভাসানি) ১০ লাখ ২ হাজার ৭শ ৭১ ভোট। শতকরা হিসাবে ৫.৩ শতাংশ। বাংলাদেশ জাতীয় লীগ ৬২ হাজার ৩শ’ ৫৪ ভোট। শতকরা হিসাবে ০.৩ শতাংশ ভোট পায়।
বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলা ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ জাতীয় কংগ্রেস, বাংল জাতীয়লীগ, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশের কমিউনিস্টপার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিস্টপার্টি (লেলিনবাদি), জাতীয় গণতান্ত্রিকদল ও শ্রমিক কৃষক সমাজবাদীদল পেয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৬শ’ ৭৩ ভোট। শতকরা হিসাবে ১.১ শতাংশ। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৫টি আসনের বিপরীতে ৯ লাখ ৮৯ হাজার ৮শ’ ৮৪ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ৫.৩ শতাংশ। নির্বাচনে ফাঁকা ভোট পড়ে ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৮শ’ ৭৫।
প্রথম নারী সাংসদ নির্বাচিত হয় ১৯৭৯ সালে
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে প্রত্যক্ষ ভোটে প্রথম নারী প্রার্থী নির্বাচিত হয় ১৯৭৯ সালে। ১৮ ফেব্রুয়ারী দেশের দ্বিতীয় এ নির্বাচনে খুলনা-১৪ থেকে সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজ নির্বাচিত হন। ৩শ’ আসনের মধ্যে নির্বাচনের কয়েক মাস আগে প্রতিষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ২০৭টি আসন লাভ করে।
নির্বাচনে ৩শ’ আসনের বিপরীতে ১ কোটি ৯৬ লাখ ৭৬ হাজার ১শ’ ২৪জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। শতকরা হিসাবে এ নির্বাচনে ৫১.৩ শতাংশ ভোট কাষ্ট হয়। এ নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ৮৯ লাখ ৩৪ হাজার ২শ’ ৩৬ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ৪১.২ শতাংশ ভোট পায় বিএনপি। বিপরীতে ২০৭ আসনে জয়লাভ করে।
একইভাবে নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ৪৭ লাখ ৩৪ হাজার ২শ’ ৭৭ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ২৪.৫ শতাংশ ভোট পায় আওয়মীলীগ। বিপরীতে ৫৪ আসনে জয়লাভ করে এ দল। বাংলাদেশ মুসলিমলীগ ১৯ লাখ ৪১ হাজার ৩শ’ ৯৪ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ১০.১ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে দলটি ৫ আসনে জয়লাভ করে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ৯ লাখ ৩১ হাজার ৮শ’ ৫১ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ৪.৮ শতাংশ। বিপরীতে ৮টি আসন লাভ করে দলটি। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ (মিজান) ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৪শ’ ২৬ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ২.৮ শতাংশ। দলটি ২টি আসন লাভ করে। জাতীয় আওয়ামী পাটি (মুজাফফর) ৪ লাখ ৩২ হাজার ৫শ’ ১৪ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ২.২ শতাংশ। বিপরীতে ১টি আসন পায় এ দল। বাংলাদেশ গণফ্রন্ট ১ লাখ ১৫ হাজার ৬শ’ ২২ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.৬ শতাংশ। বিপরীতে ২টি আসল পায় দলটি। বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (ম্যাক্সিস্ট-লিনিয়েস্ট) ৭৪ হাজার ৭শ’ ৭১ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.৪ শতাংশ। এ দলটি নির্বাচনে ১টি আসন লাভ করে। বাংলাদেশ জাতীয় লীগ ৬৯ হাজার ৩শ’ ১৯ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.৪ শতাংশ। এ দলটি নির্বাচনে ২টি আসন লাভ করে। জাতীয় একতা পার্টি নির্বাচনে ৪৪ হাজার ৪শ’ ৫৯ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.২ শতাংশ। বিপরীতে এ দলটি ১টি আসনে জয়লাভ করে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন ৩৪ হাজার ২শ’ ৫৯ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.২ শতাংশ। নির্বাচনে এ দলটিও ১টি আসন লাভ করে। বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পাটি ৩ লাখ ৩০ হাজার ৫শ’ ৮১টি ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ৪.৮ শতাংশ। নির্বাচনে দলটি ৮টি আসন লাভ করে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৯ লাখ ৬৩ হাজার ৩শ’ ৪৫ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ১০.২ শতাংশ। নির্বাচনে ১১ স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়। এ ছাড়াও নির্বাচনে খালি ভোট পড়ে ৪ লাখ ২ হাজার ৫শ’ ২৪টি ভোট।
১৯৮৬ সালের নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি
১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এর আগের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে সরকার গঠন করলেও ৭ মে’র এ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায় দলটি। নির্বাচনে ২ কোট ৮৯ লাখ ৩ হাজার ৫শ’ ৫৯ ভোটার তাদের অধিকার প্রয়োগ করে। শতকরা হিসাবে এ নির্বাচনে ৬১.১ শতাংশ ভোট কাষ্ট হয়। এ নির্বাচনে ১ হাজার ৫শ ২৭ প্রার্থী অংশ নেয়।
৩শ’টি আসনের মধ্যে ১শ’ ৫৩ আসন নিয়ে সরকার গঠন করে জাতীয় পার্টি। দলটি ১ কোটি ২০ লাখ ৭৯ হাজার ২শ’ ৫৯ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ৪২.৩ শতাংশ ভোট পায় আওয়মীলীগ। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ৭৪ লাখ ৬২ হাজার ১শ’ ৫৭ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ২৬.২ শতাংশ ভোট পায় আওয়মীলীগ। বিপরীতে ৭৬ আসনে জয়লাভ করে এ দল। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৫৭ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ৪.৬ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে দলটি ১০ আসনে জয়লাভ করে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (র্যাব) ৭ লাখ ২৫ হাজার ৩শ’ ৩ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ২.৫ শতাংশ। বিপরীতে ৪টি আসন লাভ করে দলটি। বাংলাদেশ মুসলিমলীগ ৪ লাখ ১২ হাজার ৭শ’ ৬৫ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ১.৪ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে দলটি ৪ আসনে জয়লাভ করে। জাতীয় আওয়ামী পাটি ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৮শ’ ২৪ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ১.৩ শতাংশ। বিপরীতে ৫ টি আসন পায় এ দল। বাংলাদেশের কমিউনিস্টপার্টি ২ লাখ ৫৯ হাজার ৭শ’ ২৮ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.৯ শতাংশ। বিপরীতে ৫ টি আসন পায় এ দল। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (সিরাজ) ২ লাখ ৪৮ হাজার ৭শ’ ৫ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.৯ শতাংশ। এ দলটি নির্বাচনে ৩টি আসন লাভ করে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (মুজাফফর) ২ লাখ ২ হাজার ৫শ’ ২০ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.৭ শতাংশ। এ দলটি নির্বাচনে ২টি আসন লাভ করে। বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়মী লীগ ১ লাখ ৯১ হাজার ১শ’ ৭ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.৭ শতাংশ। এ দলটি নির্বাচনে ৩টি আসন লাভ করে। বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি নির্বাচনে ১ লাখ ৫১ হাজার ৮শ’ ২৮ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.৫ শতাংশ। এ দলটি নির্বাচনে ৩টি আসন লাভ করে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৪৬ লাখ ১৯ হাজার ২৫ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ১৬.৩ শতাংশ। নির্বাচনে ৩২ স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়। এছাড়াও নির্বাচনে খালি ভোট পড়ে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ২শ’ ৯টি ভোট। এ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ কোটি ৭৮ লাখ ৭৬ হাজার ৯শ’ ৮৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ কোটি ৫২ লাখ ২৪ হাজার ৩শ’ ৮৫জন ও মহিলা ২ কোটি ২৬ লাখ ৫২ হাজার ৫শ’ ৯৪জন।
১৯৮৮ সালে নির্বাচন বর্জন করে প্রধান দলগুলো
১৯৮৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ-বিএনপিসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন বর্জন করে। ৩ মার্চ জাতীয় সংসদের চতুর্থ এ নির্বাচনে ৩শ’ আসনের মধ্যে জাতীয় পার্টি ২শ’ ৫১ আসন পেয়ে সরকার গঠন করে। এ নির্বাচনে ৫২.৫ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
অপরাপর নির্বাচনে অংশ নিলেও এ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামীলীগ, জাতীয় আওয়ামী পার্টি (মুজাফ্ফর) এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ভোট র্বজন করে।
নির্বাচনে ৪ কোটি ৯৮ লাখ ৬৩ হাজার ৮শ’ ২৯ ভোটারের মধ্যে ২ কোটি ৬৩ লাখ ৭৯ হাজার ৯শষ’ ৪৪ ভোটার পুরুষ ও ২ কোটি ৩৪ লাখ৮৩ হাজার ৮শ’ ৮৫ মহিলা ভোটার। এদের মধ্যে ২ কোটি ৬১ লাখ ৬৯ হাজার ৭১টি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে।
প্রধান দলগুলো ছাড়া নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ২শ’ ৫১ আ.সনের বিপরীতে ১ কোটি ৭৬ লাখ ৮০ হাজার ১শ’ ৩৩ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ৬৮.৪ শতাংশ। অন্যদিকে সম্মিলিত বিরোধী দল ৩২ লাখ ৬৩ হাজার ৩শ’ ৪০ ভোট পায়। নির্বাচনে তারা ১৯টি আসন লাভ করে। শতকরা হিসাবে ১২.৬ শতাংশ ভোট। বাংলাদেশ ফ্রিডম পার্টি ৮ লাখ ৫০ হাজার ২শ’ ৮৪ ভোট পায়। শতকার হিসাবে ৩.৩ শতাংশ। ২টি আসন পায় দলটি। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (সিরাজ) ৩ লাখ ৯ হাজার ৬শ’ ৬৬ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ১.২ শতাংশ। দলটি ৩ আসন পায়। বাংলাদেশ খিলাফত আন্দোলন, গণতন্ত্র বাস্তবায়ন পার্টি, জন দল, তেইশ দলীয় জোট ২ লাখ ৪২ হাজার ৫শ’ ৭১ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.৯ শতাংশ। নির্বাচনে এদের কেউই কোন আসন পায়নি। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এ নির্বাচনে ২৫ আসন লাভ করে। শতকরা হিসাবে ১৬.৩ শতাংশ। নির্বাচনে ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার ৪শ’ ৫৭ ভোট লাভ করে। এ নির্বাচনে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৬শ’ ২০টি খালি ভোট পড়ে।
২৭৮৭ প্রার্থী অংশ নেয় পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
২ হাজার ৭শ’ ৮৭ প্রার্থী অংশ নেয় ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ২৭ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৪২৪ স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ৭৫টি দলের প্রার্থীরা প্রত্যক্ষ ভোটে অংশ নেয়। নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন খালেদা জিয়ার দল বিএনপি ১শ’ ৪০টি আসন পেয়ে সরকার গঠন করে। এ নির্বাচনে ৫৫.৪ শতাংশ ভোটার তাদের অধিকার প্রয়োগ করেন।
একইভাবে নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ১ কোটি ৫ লাখ ৭ হাজার ৫শ’ ৪৯ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ৩০.৮ শতাংশ ভোট পায় আওয়মীলীগ। বিপরীতে ১শ’ ৪০টি আসনে জয়লাভ করে এ দল। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ১ কোটি ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮শ’ ৬৬ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ৩০.১ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে দলটি ৮৮ আসনে জয়লাভ করে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৪১ লাখ ৩৬হাজার ৪শ’ ৬১ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ১২.১ শতাংশ। বিপরীতে ১৮টি আসন লাভ করে দলটি। জাতীয় পার্টি ৪০ লাখ ৬৩ হাজার ৫শ’ ৩৭ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ১১.৯ শতাংশ। দলটি ৩৫টি আসন লাভ করে। বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামীলীগ ৬ লাখ ১৬ হাজার ১৪ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ১.৮ শতাংশ। দলটি ৫টি আসন লাভ করে। বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পাটি ৪ লাখ ৭ হাজার ৫শ’ ১৫টি ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ১.২ শতাংশ। নির্বাচনে দলটি ৫টি আসন লাভ করে। ইসলামী ঐক্য জোট ২ লাখ ৬৯ হাজার ৪শ’ ৩৪ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.৮ শতাংশ। দলটি ১টি আসন লাভ করে। জাতীয় আওয়ামী পাটি (মুজাফফর) ২ লাখ ৫৯ হাজার ৯শ’ ৭৮ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.৮ শতাংশ। বিপরীতে ১টি আসন পায় এ দল। গণতান্ত্রিক পার্টি ১ লাখ ৫২ হাজার ৫শ’ ২৯ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.৪ শতাংশ। বিপরীতে ১টি আসল পায় দলটি।
জাতীয় ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ১ লাখ ২১ হাজার ৯শ’ ১৮ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.৪ শতাংশ। এ দলটি নির্বাচনে ১টি আসন লাভ করে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিকদল (সিরাজ) ৮৪ হাজার ২শ’ ৭৬ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.২ শতাংশ। এ দলটি নির্বাচনে ১টি আসন লাভ করে। বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টি নির্বাচনে ৬৩ হাজার ৪শ’ ৩৪ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ০.২ শতাংশ। বিপরীতে এ দলটি ১টি আসনে জয়লাভ করে।
অন্যান্য ৬৩ রাজনৈতিক দল মিলে ১৬ লাখ ৬৩ হাজার ৮শ’ ৩৪ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ৪.৯ শতাংশ। বিপরীতে এ দলটি ৩টি আসনে জয়লাভ করে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৪ লাখ ৯৭ হাজার ৩শ’ ৬৯ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে ৪.৪ শতাংশ। নির্বাচনে ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়। এ ছাড়াও নির্বাচনে খালি ভোট পড়ে ৩ লাখ ৭৪ হাজার ২৬টি ভোট। এ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৬ কোটি ২১ লাখ ৮১ হাজার ৭শ’ ৪৩ ভোটার। এদের মধ্যে ৩ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার ৭শ’ ৭৫ জন ও মহিলা ২ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার ৯শ’ ৯৬ জন। নির্বাচনে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৭৭ হাজার ৮শ’ ৩ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ ভেঙে খালেদা জিয়া পদত্যাগ করেন
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামীলীগসহ অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল এ নির্বাচন বর্জন করে। ৫ কোটি ৬১ লাখ ৪৯ হাজার ১শ’ ৮২ ভোটারের মধ্যে নির্বাচনে ১ কোটি ১৭ লাখ ৭৬ হাজার ৮শ’ ৮১ ভোটার নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন। শতকরা হিসাবে এ ২১ শতাংশ ভোটার ভোট প্রদান করেন।
নির্বাচনে ৩শ’ আসনের মধ্যে ২৭৮টি আসন লাভ করে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এ নির্বাচনে ফ্রিডম পার্টি ১টি ও সতন্ত্র প্রার্থীরা ১০টি পায়। এছাড়াও ১০টি আসনের ফলাফল অসমাপ্ত থাকে ও আদালতের রায়ে একটি আসনের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল।
১৯ মার্চ নির্বাচিত সরকারের প্রথম সংসদ অধিবেশন শুরু হয়ে চার কার্যদিবস ২৫শে পর্যন্ত চলে। ৩০মার্চ ১৯৯৬ সালে সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। সংসদ স্থায়ী ছিল মাত্র ১২ দিন। এ দিন প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয় এবং খালেদা জিয়া পদত্যাগ করেন রাষ্ট্রপতি সাবেক প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করেন
১৯৯৩ সালে সর্বপ্রথম জামায়াত এবং তারপর আওয়ামীলীগ সংসদ সচিবালয়ে পরবর্তী নির্বাচনগুলোকে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য তত্বাবধাক সরকার বিল পেশ করে। তৎকালীন খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকার এই দাবি মেনে নেয় নি। কমনওয়েলথ ও অন্যান্য সংস্থা সরকার ও বিরোধীদলগুলোর সাথে সমঝোতার চেষ্টা করে ব্যার্থ হন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সহিংস ঘটনার মধ্যে এবং বিরোধীদলগুলোর প্রবল প্রতিবাদ ও নির্বাচন বর্জনের পরও ১৫ ফেব্রুয়ারী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৯৬ সালে আ’লীগ এককভাবে সরকার গঠন করে
১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে ৮১টি দলের ২ হাজার ২শ’ ৯৩ প্রার্থীসহ সর্বমোট ২ হাজার ৫শ’ ৭৪ প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৩শ’টি আসনের মধ্যে ১শ’ ৪৬টি আসন পেয়ে এককভাবে সরকার গঠন করে আওয়ামীলীগ। নির্বাচনে ৭৫.৪৯ শতাংশ ভোটার তাদের অধিকার প্রয়োগ করে।
নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ১ কোটি ৫৮ লাখ ৮২ হাজার ৭শ’ ৯২ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ৩৭.৪ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ১শ’ ৪৬টি আসন লাভ করে দলটি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ১ কোটি ৪২ লাখ ৫৫ হাজার ৯শ’ ৮৬ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ৩৩.৬ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ১শ’ ১৬টি আসন লাভ করে দলটি। জাতীয় পার্টি ৬৯ লাখ ৫৪ হাজার ৯শ’ ৮১ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ১৬.৪ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ৩২টি আসন লাভ করে দলটি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৩৬ লাখ ৫৩ হাজার ১৩ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ৮.৬ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ৩টি আসন লাভ করে দলটি। ইসলামী ঐক্যজোট ৪ লাখ ৬১ হাজার ৫শ’ ১৭ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ১.১ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ১টি আসন লাভ করে দলটি। জাতীয় সমাজতান্ত্রিকদল (রব) ৯৭ হাজার ৯শ’ ১৬ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ০.২ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ১টি আসন লাভ করে দলটি।
অন্যদিকে ৭৪টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা মিলে ৬ লাখ ৬২হাজার ৪শ’ ১৫ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলগুলো ১.৬ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে কোন আসন লাভ করেনি দলগুলো। ২শ’ ৮১ স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৬শ’ ১৮ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে তারা ১.১ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে মাত্র ১টি আসন লাভ করে। এ নির্বাচনে খালি ভোট পড়ে ৪ লাখ ৬২ হাজার ৩শ’ ২ পড়ে। নির্বাচনে ৫ কোটি ৬৭ লাখ ১৬ হাজার ৯শ’ ৩৫ ভোটারের মধ্যে ২ কোটি ৮৭ লাখ ৫৯ হাজার ৯শ’ ৯৪ পুরুষ ও ২ কোটি ৭৯ লাখ ৫৬ হাজার ৯শ’ ৪১ জন মহিলা। এদের মধ্যে ৪ কোটি ২৮ লাখ ৮০ হাজার ৫শ’ ৭৬ জন ভোটার নির্বাচনে ভোট প্রয়োগ করে।
মহিলা প্রার্থীর ছড়াছড়ি অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বাধিক মহিলা প্রার্থী প্রত্যক্ষ নির্বাচনে অংশ নেয়। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর আওয়ামীলীগ-বিএনপিসহ ৫৪টি দলের ১ হাজার ৯শ’ ৩৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ৪শ’ ৪৮ সতন্ত্রপ্রার্থীসহ এ নির্বাচনে ৩৭জন মহিলা প্রার্থী নিবাচনে অংশ নেয়। এ নির্বাচনে ৭৪.৯ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে।
তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বিতীয় এ নির্বাচনে ৩শ’ আসনের মধ্যে ১শ’ ৯৩ আসন পেয়ে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সরকার গঠন করে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ছিলেন লতিফুর রহমান।
নির্বাচনে জাতীয়তাবাদীদল বিএনপি ২ কোটি ৩০ লাখ ৭৪ হাজার ৭শ’ ১৪ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ৪১.৪০ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ১শ’ ৯৩ আসন লাভ করে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ২ কোটি ২৩ লাখ ১০হাজার ২শ’ ৭৬ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ৪০.০২ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ৬২ আসন লাভ করে। জাতীয় পার্টি ও ইসলামী জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের প্রার্থীসহ ৪০ লাখ ২৩ হাজার ৯শ’ ৬২ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ৭.২২ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ১৪ আসন লাভ করে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২৩ লাখ ৮৫হাজার ৩শ’ ৬১ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ৪.২৮ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ১৭আসন লাভ করে। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি ৫ লাখ ২১ হাজার ৪শ’ ৭২ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ০.৯ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ৪ আসন লাভ করে। ইসলামী ঐক্যজোট ৩ লাখ ১২হাজার ৮শ’ ৬৮ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ০.৫৬ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ২ আসন লাভ করে। কৃষক শ্রমিক জনতালীগ ২ লাখ ৬১ হাজার ৩শ’ ৪৪ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ০.৪৭ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ২ আসন লাভ করে। জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) ২লাখ ৪৩ হাজার ৬শ’ ১৭ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ০.৪৪ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ১ আসন লাভ করে।
এছাড়াও সতন্ত্র প্রার্থীরা ২২ লাখ ৬২ হাজার ৪৫ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ৪.০৬ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ৬ আসন লাভ করে। নির্বাচনে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৮শ’ ৭১ ভোট বাতিল হয়। নির্বাচনে ৭ কোটি ৫০ লাখ ৬শ’ ৫৬ ভোটারের মধ্যে ৩ কোটি ৮৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯শ’ ৭১ ভোটার পুরুষ ও ৩ কোটি ৬৩ লাখ ১৫ হাজার ৬শ’ ৮৪ ভোটার মহিলা। এদের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে ৫ কোটি ৬১ লাখ ৬৯ হাজার ২শ’ ৩৩ ভোটার। নির্বাচনে ২৯ হাজার ৯শ’ ৭৮ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
জোট-মহাজোটে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
জোট-মহাজোট গঠনের মাধ্যমে নবম জাতীয় সংসদ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নেতৃত্বে দুটি বৃহৎ জোট গঠন হয়। আওয়ামীলীগ এরশাদের জাতীয় পার্টিসহ চৌদ্দদলীয় জোট ও বিএনপি জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে চারদলীয় জোটগঠন করে।
এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২শ’ ৬৩ আসন পেয়ে সরকার গঠন করে। আওয়ামীলীগ ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৮৭ হাজার ৪শ’ ৫১ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ৪৯ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ২শ’ ৩০ আসন পায়। জাতীয় পার্টি ৪৮ লাখ ৬৭ হাজার ৩শ’ ৭৭ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ৭ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ২৭ আসন পায়। জাতীয় সমাজতন্ত্রিকদল ৪ লাখ ২৯ হাজার ৭শ’ ৭৩ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ০.৬ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ৩ আসন পায়। বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টি ২ লাখ ১৪ হাজার ৪শ’ ৪০ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ০.৩ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ২ আসন পায়। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি ১ লাখ ৬১ হাজার ৩শ’ ৭২ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ০.২ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ১ আসন পায়।
অন্যদিকে এ নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ২ কোটি ২৯ লাখ ৬৩ হাজার ৮শ’ ৩৬ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ৩৩.২ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ৩০ আসন পায়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৩১ লাখ ৮৬ হাজার ৩শ’ ৮৪ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ৪.৬ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ২ আসন পায়। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি ৯৫ হাজার ১শ’ ৮৫ শতাংশ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ০.১ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ১ আসন পায়। এছাড়াও সতন্ত্র প্রার্থীরা ৩৩ লাথ ৬৬ হাজার ৮শ’ ৫৮ ভোট পায়। শতকরা হিসাবে দলটি ৪.৯ শতাংশ ভোট পায়। বিপরীতে ৪ আসন পায়। নির্বাচনে ৬ কোটি ৯১ লাখ ৭২ হাজার ৬শ’ ৪৯ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১শ’ ৫৪ এমপি নির্বাচিত
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১শ’ ৫৪ এমপি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়। ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারী নির্বাচন প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ অধিকাংশ দল বর্জন করে। এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগসহ ১৭টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়। নির্বাচনের আগে অধিকাংশ এমপি নির্বাচিত হওয়ায় ওই দিন ১শ’ ৪৭টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৯শ’ ৭৭ ভোটারের মধ্যে ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯শ’ ৩৮ ভোট দেয়ার সুযোগ পায়।
এর আগে ২০১১ সালের ৩০ জুন তত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাশ হয়। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার শরিক জোটগুলো এর পর থেকেই নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা পুনরায় চালু করার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। সরকারী দল আওয়ামীলীগ ও বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচনের ঘোষণা দেন। তখনই বিরোধী দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না বলে ঘোষণা দেন।
নির্বাচনপূর্ব সহিংসতার দিক থেকে এ নির্বাচন অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। শুধু মাত্র নির্বাচনের দিন সহিংসতায় ১৯ জন মারা যায়। ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ভোটের আগের দিন পর্যন্ত ৪১ দিনে সহিংসতায় ১শ’ ২৩জন লোক মারা যায়। এত সংখ্যক মানুষ হতাহতের ঘটনা এর আগে কোন নির্বাচনে ঘটেনি।
সম্পাদনা: আরএইচ/এনকে/এইচআর







