উন্নয়ন যাই হোক! কিন্তু গনতন্ত্র বলতে বাংলাদেশে কিছুই নেই বলে মন্তব্য করেন ফেনী-১( ছাগলনাইয়া,ফুলগাজী,পরশুরাম) আসনে বিএনপির সমন্বয়ক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিন যুবদলের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু।
ছাগলনাইয়ায় পৌর নির্বাচন ও দলীয় সমসাময়িক বিষয় নিয়ে নতুন ফেনীর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, আ’লীগ সরকার আজ প্রায় ১২ বছর বিনা ভোটে দেশ চালাচ্ছেন। শুধুমাত্র প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে। একটানা ১২ বছর কেউ ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়ন কম বেশি হবেই। উন্নয়ন যাই হোক, কিন্তু গনতন্ত্র বলতে বাংলাদেশে কিছুই নেই।
পরশুরামে পৌরনির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, পরশুরাম পৌরনির্বাচন আমাদের দলীয় প্রার্থীকে তার বাড়িঘরে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন সরকার দলীয় প্রার্থীর ক্যাডাররা। একজন প্রার্থীকে যদি বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া না হয় তাহলে সে কিভাবে মনোনয়ন জমা দিবে। আমাদের নেতাকর্মীরা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছে কিন্তু প্রশাসন তাদেরকে কোন ধরনের সহায়তা করেনি, উল্টো আমাদের প্রার্থীদেরকে দোষারোপ করেছেন। তাহলে এখানে গনতন্ত্র কোথায় আছে। পরশুরামে আমাদের দলীয় প্রার্থীদের বাড়িঘরে কিভাবে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে তা ওই এলাকার মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনের কাছে জিজ্ঞেস করলে এর সত্যতা পাবেন। শুধু ফেনী নয় গনতন্ত্র বাংলাদেশের কোথাও নেই।
ফেনী পৌর নির্বাচন প্রসঙ্গে রফিকুল আলম মজনু বলেন, আমি পুরো ফেনী শহরে নির্বাচনী গনসংযোগ করেছি, কিন্তু কোথাও কোন ধরনের বাঁধা বিপত্তি পাইনি। তবে আমাদের প্রার্থীর পোস্টার ছিড়ে ফেলার অভিযোগ পাচ্ছি। আমাদের কাউন্সিলর প্রার্থী রোকনুজ্জামান লিটনের বাড়িতে হামলা করার কারনে তার বাবা স্ট্রোক করে মারা যায়। বিএনপি নেতা আলমের উপর হামলা এবং তার দোকানপাট ভাংচুর করেছে। শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিনকে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের সময় প্রশাসনের সামনে তাকে মারধর করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, একসময় ফেনীতে অনেক সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলতো। কিন্তু এখন অতীতের চেয়ে অনেকটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কমে এসেছে। কিন্তু আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, হামলা ও গ্রেফতার বন্ধ হয়নি। ইচ্ছা করলেই আমাদের দলীয় কর্মসূচি ঠিকভাবে পালন করতে পারিনা। আমাদেরকে তাদের অনেক বাঁধা বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়। যদি আ’লীগ কোথাও ভালো কাজ করেন আমরা অবশ্যই বলবো তারা ভালো কাজ করেছেন। আর যদি খারাপ কাজ করেন তাহলে আমরা কেউই ভালো বলবেনা।
বিএনপির উন্নয়ন প্রসঙ্গে মজনু বলেন, সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই এলাকারই সন্তান হিসেবে ক্ষমতায় থাকতে উনি শুধু ফেনীর প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি সারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ক্ষমতায় থাকতে আমাদের ফেনীতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। যেমন ফেনী ক্যাডেট কলেজ, কারিগরি শিক্ষার জন্য ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, কম্পিউটার ইনস্টিটিউট, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরামে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ডায়বেটিস হাসপাতাল, রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কার্লভার্ট সহ অনেক কিছু নির্মাণ করেন। ফেনীতে একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল একটি বিশ্ববিদ্যালয় সহ অনেক কিছু করার পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু সব কাজতো একসাথে করা সম্ভব হয়নি। সময় পেলে আরো অনেক উন্নয়ন কাজ করতেন। দেশনেত্রী ফেনীর মেয়ে হিসেবে শুধু ফেনীকে নিয়ে ভাবেননি সারা বাংলাদেশের সব জেলায় তিনি উন্নয়ন করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ছাগলনাইয়া ছাত্রদলের কমিটি গঠন নিয়ে দলীয় কোন্দল প্রসঙ্গে রফিকুল আলম মজনু বলেন, আমাদের দলে কোন অন্তকোন্দল বা বিভক্তি নেই। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যারা বিবাহিত তারা ছাত্রদল করতে পারবেনা। সেখানে কেউ যদি মনে করেন তাদের লোক বিবাহিত বা অশিক্ষিত হোক, দিয়ে রাজনীতি করানোর কোন সুযোগ নেই। দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করার কারনে দু’তিনজনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। কেউ যদি তাদেরকে শেল্টার দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও দল ব্যাবস্থা নিবে। এই দলে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ছাড়া আর কেউই নীতিনির্ধারক নন। এক্ষেত্রে অনেকে মনে করেন দেশনেত্রী দীর্ঘদিন পার্টিতে চেয়ারপার্সন হিসেবে আছেন আমি কেনো সভাপতি থাকতে পারবোনা। এটা হচ্ছে সম্পূর্ণ বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। একজন ছাত্রদল করেছে তাকেই সারাজীবন ছাত্রদল করতে হবে, এটা কোন কথা নয়। যে যেখানে যোগ্য আমরা তাকে সেখানে দিয়েই কাজ করাতে চাচ্ছি।
মজনু ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে ফেনী-১ আসন থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হয়ে সংসদ নির্বাচন করেন।
সম্পাদনা:আরএইচ/এমকেএইচ







