হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে ধর্মপুরের জোয়ার কাছাড় মাঠে। ফেনী জেলার বিভিন্ন স্থান ও জেলার বাইরে থেকে আসা জনস্রোত প্রমাণ করে আরজু তাদের ভালোবাসার মানুষ ছিলো। মৃত্যুর আগে না পারলেও মৃত্যুর পরে সবাইকে এক কাতারে দাড়িয়ে গেছেন তিনি। দল-মত, ভেদ-বিভেদ ভুলে সবাই শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তাকে। সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ে শোকের দাগ কেটে চির বিদায় নিলেন ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এম আজহারুল হক আরজু।
শুক্রবার (৫মার্চ) বাদ আছর জোয়ার কাছাড় নিজ গ্রামে জানাযা শেষে বুটিয়া দিঘীর পাড়ে চির নিদ্রায় শায়িত হন। ফুলে ফুলে ডেকে গেছে তার কবরের মাটি।
তিনি ফেনী জেলা ও সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, ফেনী জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও জেলা আওয়ামীলীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। ধর্মপুর ইউনিয়নের ৩বারের চেয়ারম্যান, তার মধ্য সর্বশেষ জেল থেকে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান হন। তবে দীর্ঘ দিন থেকে ঢাকায় অবস্থানকালে জেলা রাজনীতির বাইরে ছিলেন।

তার মৃত্যুতে ফেনী জেলা আওয়ামীলীগ শোক প্রকাশ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক, শ্রদ্ধা জানিয়ে হাজার হাজার মানুষ পোস্ট করে। অনেকেই আবার ফেনীর রাজনীতিতে তার অবদানের কথা তুলে ধরে তাকে ফেনীর আওয়ামী রাজনীতির সিংহ পুরুষ বলেও আখ্যায়িত করেছেন।
ফেনী জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেছেন, ‘আমাদের আওয়ামীলীগ বড় দল। আমরা বড় পরিবার। আমাদের ভিতর মান-অভিমান থাকতে পারে। আরজুর যত মামলা আছে আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে সব প্রত্যাহার করা হবে। এই পরিবারের সাথে আমি আছি, থাকবো। আরজুকে চেয়েছিলাম, মিলেমিশে একসাথে রাজনীতি করতে। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম টিআর আরজুকে বন্টন করতে দিয়েছি। আরজুর প্রতি আন্তরিকতার কোন কমতি ছিল না। কুচক্রি মহল তাকে ভিন্নপথে ব্যবহার করেছে। যারা এতদিন আরজুকে কাজে লাগিয়েছে তাকে দিয়ে বিভিন্নভাবে স্বার্থ হাসিল করেছেন আপনারাতো এই জানাযায় আসা উচিত ছিল। হয়তবা জয়নাল হাজারী ভাই অসুস্থ, কিন্তু ইকবাল সোবহান সাহেব শেষ জানাযায় অংশগ্রহণ করবেন। আমরা সেটা প্রত্যাশা করেছি। তিনি আজ আসেননি কেন ? জানাযা পূর্ব বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
জানাযায় অংশ গ্রহন করেন ফেনী জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. হাফেজ আহাম্মদ, আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার মজুমদার তপন।
সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোতাহার হোসেন সোহাগের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন আরজুর ছোট ভাই মাজহারুর হক সুমন। তিনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও তার ভাইয়ের জন্য দোআ প্রার্থনা করেন।
সকল উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, জনপ্রতিনিধি, আইনজীবি, সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব, পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, ব্যাবসায়ী, জনসাধারন তাকে শেষবারের মত দেখতে এবং শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শুক্রবার ভোর ৫টার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নেয়ার পথে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৪৯বছর। তিনি এক পুত্র, আত্মীয়, স্বজন অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে যান।
সম্পাদনা:আরএইচ/এইচআর







