‘দারুচিন’ দ্বীপটা যেমন সুন্দর তেমনি সুস্বাদু তানজিনার দারুচিনি’র আচার। অল্প দিনেই আচার তৈরীতে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তার নিজের হাতে ঘরে বানানো হরেক রকম আচার ফেনী জেলা, সারাদেশসহ বিদেশেও যায়। আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে অথবা পেজ থেকে অর্ডার প্রবাসীরা বিদেশে আচার নিয়ে যায়।
দারুচিনি’র স্বত্ত্বাধিকারী তানজিনা খন্দকার বলেন, নিজে কিছু করতে চাই কাজ দিয়ে আলাদা করে পরিচিত পাওয়ার জন্যই ‘দারুচিনি’। বিয়ের পর যখন সবাই জিজ্ঞেস করত স্বামী কি করে? তখন মাথায় আসলো আমার কথা কেউ জিজ্ঞেস করেনা কেন! আমি কি করি! কিছু একটা করব যেন আমার ও বলার জায়গা তৈরী হয়। সেই চিন্তা মাথায় রেখে এই ব্যাবসা শুরু করা।
তিনি বলেন, যাই করিনা সংসারটা আগে সামলাতে হবে। বাহিরে কাজ করতে গেলে আবার সংসার-শশুর বাড়ির সব দিক ঠিক রাখা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। তাই ঘরে বসে কিছু করার চিন্তা থেকেই মাথায় আসলো অনলাইনে ব্যাবসা করার। আর আমি আচার বানাতে ছোট বেলা থেকেই পারদর্শী ছিলাম। সবাই খুব প্রশংসা করত। সেই গুণটাকে কাজে লাগালাম। ভাবলাম যেটা ভালো পারি সেটা দিয়েই শুরু করি। এখন তো সবাই খুব বেশি পছন্দ করে আমার কাজ কে। দেশ বিদেশে যেখানেই আচার পাঠানো হয়েছে সবাই বলেছে দারুচিনির জন্য মন থেকে দোয়া কারণ ভালো মানের আচার এই পেজ থেকেই পাওয়া যায়।

তানজিনার বানানো আচার
৩ বছর ধরে আচার তৈরী করছেন তিনি। প্রথমে ১৫০০ টাকা পুঁজি দিয়ে ব্যাবসা শুরু করে এখন প্রতিমাসে প্রায় ১০ হাজারের উপরে আয় হয়।
ফ্রেশ ক্যামিকেল মুক্ত ৩০ রকমের আচার তৈরী করে দারুচিনি। রসুন, জলপাই কালোজাম, তেতুল, মিক্সড হৃদয়হরন, কালোজিরা, চালতার আচারের চাহিদা বেশি।
তানজিনা জানান, শুরুটা খুব একটা সহজ ছিলনা। অনেক পরিশ্রম করে স্বামী-সংসার সামলে ব্যাবসা করা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিলো। আচার তৈরী করা, ফেসবুকে মার্কেটিং, অর্ডার নেয়া, ডেলিভারি প্রসেসিং সবকিছু আমাকে দেখতে হয়। আলহামদুলিল্লাহ স্বপ্ন পূরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি এটা দেখে খুবই ভালো লাগে। আমার স্বপ্ন এই প্রতিষ্ঠান কে ১০বছর পর আমি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চাই। আপাতত আচার ছাড়া অন্য কিছু যুক্ত করার ইচ্ছে নেই।
তিনি বলেন, আমার শশুর বাড়ির মানুষগুলো আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে। পরিবারের সবার ভালোবাসা, উৎসাহ না পেলে হয়তো এতদূর আসা সম্ভব হতোনা। শশুর বাড়ির লোকদের সহযোগিতা পাওয়া ভাগ্যর ব্যাপার। যে সকল নারী উদ্যোক্তা হতে চায় তাদের পরিবার যদি পাশে থাকে তাহলে তারা সহজে সফল হতে পারবে।
নতুন উদ্যেক্তাদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, যেই কাজটি খুব ভালো পারে মন থেকে আসে সেটা নিয়েই যেন কাজ করে। অমুক এটা করে সফলতা পেয়েছে বলে সেটা আমিও করে সফল হবে তা কিন্তু ঠিক না। কারণ অভিজ্ঞতা একটা বড় ব্যাপার। হয়ত সে তার কাজে অভিজ্ঞতা দিয়েই সফল হয়েছে।
সম্পাদনা:আরএইচ/এইচআর







