আলমগীর হোসেন রিপন >>
সোনাগাজী মোহাম্মদ ছাবের মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় অত্র এলাকার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ। ১৯৪৫ সালে সোনাগাজী পৌরসভার মরহুম ছাবের হোসেন চৌধুরী এই শিক্ষালয়টি প্রতিষ্ঠান করেন। সেই থেকে উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এ বিদ্যালয়টি। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়েছে হাজার হাজার মানুষের মনে।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম ছিলো যা এখনো অক্ষুন্ন রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে গভর্নিং বডির সভাপতির রুহুল আমিনের নেতৃত্বে বিদ্যায়লয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সোনাগাজীর সাধারণ মানুষকে এ প্রতিষ্ঠানকে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যেতে তিনি নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
প্রতিষ্ঠানের বর্তমান প্রধান শিক্ষক জয়নুল আবেদিন। তিনি ২০১০ সালের ১৯ ডিসেম্বর হতে ১২ সালের ১৯ মার্চ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। তারপর ১৯ মার্চ ২০১২ হতে এপর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বপালন করে আসছেন। জয়নুল আবেদিন হচ্ছেন এ প্রতিষ্ঠানের ২৩ তম প্রধান শিক্ষক। প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক ছিলেন ক্ষেত্র বাবু বিএ।
সোনাগাজী উপজেলার সবচেয়ে বেশী ছাত্র-ছাত্রী অধ্যায়ন করে সুনামধন্য এই বিদ্যালয়ে। দূর-দূরান্ত থেকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে নিজের ছেলে মেয়েদের এখানে ভর্তি করাতে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয় অভিভাবকরা। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে ৩শ’ ৮৯, সপ্তমে ৪শ’ ২৪, অষ্টমে ৩শ’ ৩২, নবমে ২শ’ ৯২ এবং দশম শ্রেনীতে ২শ’ ৯৭ জন ছাত্র-ছাত্রী অধ্যায়নরত আছে।
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সাধারণ, বিজ্ঞান, কমার্স, ভোকেশনালের সাধারণ মেকানিক ও বিল্ডিং মেন্টিন্যান্স বিভাগে অভিজ্ঞ ২৭জন শিক্ষক পাঠদান করছে। এছাড়াও ৭টি ডিজিটাল ক্লাসে প্রোজেক্টরের মাধ্যমে শিক্ষা নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা এখানকার শত শত শিক্ষার্থী।
প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় সংযোগ করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। যা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক জয়নুল আবদিন। প্রতিষ্ঠানের অফিস পিয়ন পাহারাদারসহ ৭জন কর্মচারী রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে বড় ভবন ৪টি আধাপাকা ১টি সেমিপাকা ২টি এবং ১৫০ ফুটের একটি মসজিদ রয়েছে।
বিগত পাঁচ বছরের ফলাফলে প্রতিষ্ঠানটি তাদের শীর্ষ স্থানে আসিন হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। এসএসসিতে ২০১২ সালে ১শ’ ৩১জন, ২০১৩ সালে ১শ’ ৪২জন, ২০১৪ সালে ১শ’ ৫৭জন, ২০১৫ সালে ১শ’ ৯৮জন, ২০১৬ সালে ২শ’ ১৩জন। ভোকেশনালে ২০১২ সালে ৬১জন, ২০১৩ সালে ৪৩জন, ২০১৪ সালে ৫৯জন, ২০১৫ সালে ৫৭জন, ২০১৬ সালে ৫৪জন। জেএসসিতে ২০১২ সালে ২শ’ ৭০জন, ২০১৩ সালে ২শ’ ৭৭জন, ২০১৪ সালে ৩শ’ ৭জন, ২০১৫ সালে ৩শ’ ৬০জন, ২০১৬ সালে ৩শ’৪১জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়ে দেশের বিভিন্ন সুনামধন্য প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়ন করে ছাবের পাইলটের সুনাম অক্ষুন্ন রাখছে।
২০১২ সালে ১০ জন, ২০১৩ সালে ৯জন, ২০১৪ সালে ২৯জন, ২০১৫ সালে ৩১জন এবং ২০১৬ সালে ২৬জন কৃতি শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারী বৃত্তি লাভ করেছে। এবং ২০১৬ শিক্ষাখাতে বিশেষ অবদানের জন্য প্রধান শিক্ষক জয়নুল আবেদিন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক পুরস্কারে ভূষিত হোন।
প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত পরিকল্পনায় ছিল সরকারী করণ যা ইতিমধ্যে সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে। অতি শীগ্রই এর কার্যকরের মাধ্যমে এই বিদ্যালয়টি উপজেলার একমাত্র সরকারী হাইস্কুল হিসেবে স্বীকৃতির পাশাপাশি শিক্ষারমানেও জানান দেয়াই একমাত্র উদ্দেশ্য।
প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক জয়নুল আবেদিন বলেন, সোনাগাজী মোহাম্মদ ছাবের মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় অত্র এলাকা নিরক্ষর মুক্ত রাখতে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। ১৯৪৫ সালে থেকে অধ্যবদী পর্যন্ত শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে সোনাগাজীসহ সারাদেশে। এই প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্রছাত্রী দেশের বিভিন্ন উচ্চ পদে আসিন হয়ে দেশ ও মানবতার সেবা করে যাচ্ছে। এটি অত্র উপজেলার শিক্ষার মানোন্নয়নে সর্বাধিক ভুমিকা পালন করছে।
প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি রুহুল আমিন জানান, সোনাগাজী মোহাম্মদ ছাবের মডেল উচ্চ বিদ্যালয় আমাদের উপকূলীয় এলাকার শিক্ষার মানোন্নয়নে সর্বোপরি চেষ্টা করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে এটি উপজেলার একমাত্র সরকারী হাইস্কুল হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এই প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো খুব ভালো সরকারীকরণের মাধ্যমে কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন হলেও বেশীর ভাগ স্বয়ংসম্পূর্ণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই উপকূলীয় এলাকায় শিক্ষার মানোন্নয়নে এই প্রতিষ্ঠানকে সরকারীকরণ করায়।
সম্পাদনা: আরএইচ/এএইচআর