যে বয়সে স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করার কথা, ঠিক সে বয়সে এসে অসুস্থ বাবা সংসারের হাল ধরে মুচির কাজ করছে ১৩ বছরের শ্রী রবি দাস নয়ন। করোনা পরিস্থিতিতে আয় রোজগার কমে যাওয়ায় কষ্টে দিনাতিপাত করছে তার পরিবার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছাগলনাইয়া পৌর শহরের জিরো পয়েন্টে জুতা সেলাইয়ের কাজ করছে নয়ন। কাস্টমার চলে গেলে টাকার অভাবে কিনতে না পারা নিজের পরনের প্যান্টটি জুতা সেলাই করার সুঁই সুতা দিয়ে সেলাই করছে সে।
নতুন ফেনী’র এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে নয়ন দাস বলেন, ৮ বছর আগে জামালপুর জেলা সদর থেকে তার বাবা শ্রী রবি দাস ও মাতা মুক্তা রানী দাস’র সাথে ছাগলনাইয়া পৌর শহরের মিয়াজি পাড়ায় ভাড়া বাসায় আসেন তারা। দু’ভাই দু’বোনের মধ্যে নয়ন সবার বড়। পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে পড়াশোনায়ও বেশিদূর এগোতে পারেনি। তার বাবার সাথে এক বছর আগে থেকে মুচির কাজে সহযোগিতা করতো সে। কিন্তু হঠাৎ তার বাবা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার কারণে এখন একাকী কাজ করতে হয় নিজেকে।
নয়ন জানায়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জুতা সেলাই করে আয় হতো ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা। আর এখন করোনা প্রভাবের কারণে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বসে ১’শ থেকে ১’শ’৫০ টাকা আয় হয়। এতে করে তাদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যায়।
নয়ন দাস আরো বলেন, বেশ কিছুদিন আগে একজন লোক এসে অন্য মুচিদের সাথে তাকেও সামান্য পরিমাণ চাল, ডাল, তেলসহ অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে যায়। কিন্তু এরপর থেকে কেউ আর তাদের কাছে আসেনি। সরকারীভাবে নানা ধরণে সহযোগতা আসলেও এখন পর্যন্ত কোন সহযোগিতা পায়নি নয়নের পরিবার। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটছে তার।
এব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল নতুন ফেনী’কে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মুচি’র কাজ করা শিশু নয়ন দাসসহ অন্যান্য মুচিদেরকে উপজেলা পরিষদ থেকে খাদ্যসামগ্রী প্রদানসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
সম্পাদনা: আরএইচ/এমকেএইচ







