স্কোয়াশ দেখতে সাধারণ শসার মতো কুমড়া জাতীয় সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হলেও এর খাদ্য ও পুষ্টিগুণ কুমড়ার চেয়ে অনেক বেশি। খেতেও অনেক সুস্বাদু একটি সবজি। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও হার্টের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। স্কোয়াশে একই সঙ্গে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, খনিজ, ভিটামিন-এ, ভিটামিন বি-৬, কপার, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ক্যারোটিনয়েড এসিড ও ফলিড। এছাড়াও অন্যান্য অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানে ভরপুর। নিয়মিত স্কোয়াশ খেলে ফ্রি রেডিকেলসের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করা সম্ভব।

খরচ ও পরিচর্যার তুলনায় বেশি লাভ হওয়ায় ফেনীর কৃষিতে স্কোয়াশ চাষ যোগ করেছে নতুন মাত্রা।গ্রামাঞ্চলে কুচা নামেও এটি বেশ পরিচিত। শখের বসে স্কোয়াশ চাষে সফলতার মুখ দেখছেন ছাগলনাইয়া উপজেলার কৃষক আব্দুল মান্নান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার রাধানগর ইউপির কৃষক আব্দুল মান্নান ও তার ছেলে আব্দুল মোমিন গাছ থেকে স্কোয়াশ, কুচা তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আলাপকালে আব্দুল মান্নান বলেন, অনেক বছর তিনি ইউরোপের দেশ স্পেনে ছিলেন। সেখানে খাবারের সাথে মুখরোচক সবজি হিসেবে স্কোয়াশ থাকতো। তিনি দেশে ফিরে এসে আবার না গিয়ে চিন্তা করলেন ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের সবজি স্কোয়াশ দেশেই চাষ করবেন।
ইউটিউব থেকে কলাকৌশলের শিক্ষা নিয়ে বাড়ির পাশে তার নিজের ৪০ শতক জায়গার উপর গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ঢাকা থেকে স্কোয়াশের বীজ নিয়ে আসেন। এরপর মাটিকে ভালোভাবে চাষ দিয়ে বীজগুলো রোপণ করেন। জায়গা তৈরি, বীজ ক্রয় থেকে শুরু করে সবজি উঠানো পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। বীজ রোপণ থেকে সবজি ধরা পর্যন্ত ৬০ থেকে ৭০ দিন লাগে। প্রতিটি গাছে ২০ থেকে ২৫ টি ফল ধরে। দেখতে শসার মতো স্কোয়াশ সবজিটি দুই থেকে তিন কেজি ওজনের হয়ে থাকে। তিনি প্রথম দিন থেকে এ পর্যন্ত ১৮’শ কেজি বিক্রি করেছেন। আরো ৫’শ কেজি বিক্রির আশা প্রকাশ করেন। বীজ উৎপাদনের জন্য ক্ষেতে বড় সাইজের কিছু সবজি রেখেছেন।

তিনি আরো বলেন, সবজিটি দেখতে শসার মতো হলেও এর স্বাদ ও পুষ্টিগুন মিষ্টি কুমড়ার থেকেও অনেক বেশি। এটি বিদেশি সবজি হলেও বাংলাদেশে এর চাষ খুবই কম। আমি কৃষিবান্ধব বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করবো কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি জেলা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্কোয়াশ চাষে উদ্বুদ্ধ এবং বীজ, সার, ঔষধ দিয়ে সহযোগিতা করতে। বিদেশে এই সবজির চাহিদা অনেক বেশি এবং এটি রপ্তানি করে প্রচুর বিদেশী মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। আব্দুল মান্নান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্কোয়াশ চাষ শুরু করার আগে এবং পরে কয়েকবার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করেও কোন ধরনের সহযোগিতা বা পরামর্শ পাইনি।
এবিষয়ে জানতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাফকাত রিয়াদ’র সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সম্পাদনা:আরএইচ/এইচআর







