সোনাগাজী উপজেলার আমিরাদ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে সুবিশাল জায়গায় পহেলা জানুয়ারী ১৯৭৩ সালে শিক্ষা বিস্তারের চিন্তায় মোহাম্মদ সামছুল হকের নামে সোনাপুর এমএস হক উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। শামছুল হক সোনাগাজী উপজেলার ৪নং মতিগঞ্জ ইউনিয়নের হাজী সোনা মিয়ার সুযোগ্য সন্তান। তিনি সর্বশেষ জীবনবীমা কর্পারেশনে চাকুরী করেছিলেন।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে শিক্ষার্থীদের অধ্যায়ন করার ব্যবস্থা করে কর্তৃপক্ষ। যার নিমিত্ত্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি উপজেলায় অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজের জানান দিচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানের বর্তমান প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন মাহবুবুল হক। তিনি দায়িত্ব হাতে নিয়ে নিষ্ঠার সাথে এখনো পালন করছেন।
সোনাগাজী হাজী এমএস হক উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আজিজুল হক হিরণ।
প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ৮৩ জন, সপ্তম ১৮৪ জন, অষ্টম ২০১ জন, নবম ২৩৪ জন, দশম ৭৬ জন শিক্ষর্থী অধ্যায়ন করছে। এর মধ্যে নবমে সাধারণ বিভাগে ১৮৯, বিজ্ঞান ২৫ ও ব্যাবসায় শিক্ষা ৪০জন, দশম সাধারণ বিভাগে ৫২ জন, বিজ্ঞান ১১ জন ও ব্যাবসায় শিক্ষা ১৩ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে।
ফলাফলে দেখা যায় উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে এগিয়ে রয়েছে সোনাপুর হাজী এমএস হক উচ্চ বিদ্যালয়।
বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে জেএসসিতে ২০১৪ সালে ২৩২ জনের মধ্যে ২২২ জন ৯৬.৬৭%, ২০১৫ সালে ১৯১ জনের মধ্যে ১৮৭ জন৯৭%, ২০১৬ সালে ১৯৮ জনের মধ্যে ১৯১ জন ৯১.৭১%, ২০১৭ সালে ১৮৭ জনের মধ্যে ৩০ জন ১৬.৭৬%, ২০১৮ সালে ২৯০ জনের মধ্যে ২৩০ জন ৭৯.৩১% শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়।
এসএসসিতেও ভালো ফলাফল করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৫ সালে ১৪৭ জনের মধ্যে ১১২ জন ৭৬.১৯%, ২০১৬ সালে ১০৮ জনের মধ্যে ১০১ জন ৯৯.৫২%, ২০১৭ সালে ১৭৬ জনের মধ্যে ৪৩ জন ২৪%, ২০১৮ সালে ১৩১ জনের মধ্যে ৮৬ জন ৫৮%, ২০১৯ সালে ১৬৫ জনের মধ্যে ১৪১ জন ৮৫.৪৪% শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়ে দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করে রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যাপক ভুমিকা রাখছে।
জেএসসিতে ২০১৫ সালে ৭জন, ২০১৫ সালে ১৩ জন ও ২০১৬ সালে ৪ জন জিপিএ ফাইভ পেয়েছে।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে সর্বমোট শিক্ষক ১৪জন, লাইব্রেরিয়ান একজন, অফিস সহকারী একজন, ও অফিস পিয়ন ২জন রয়েছে। এছাড়াও বিজ্ঞান বিভাগে দুইজন ও ব্যাবসায় শিক্ষা বিভাগে একজন শিক্ষকের শূণ্য পদ রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের তিন তলা দুইটি, একতলা দুইটি ভবন ও একটি টিনসেট ঘর রয়েছে। প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো বিজ্ঞান ভবন ও সীমানা প্রাচীর।
প্রতিষ্ঠান সাবেক শিক্ষার্থীর মধ্যে কর্মজীবনে বাংলাদেশ ব্যাংকে রয়েছে ডক্তর আবুল কালাম আজাদ, এবি ব্যাংকে আবুল কাসেম জিলানী, ঢাকা ক্যামব্রিয়ান কলেজে আনোয়ার হোসেন খাঁন, এবি ব্যাংকে সাবধার হোসেন, সোনাগাজী উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক হিরণ সহ দক্ষ শিক্ষকদের পাঠদানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আসীন হয়ে প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুন্ন রাখছে।
প্রধান শিক্ষক মাহবুবুল হক জানায়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রতিষ্ঠানটি অত্র এলাকার গরীব অসহায় পরিবারের সন্তানদের লেখাপড়ায় মনোযোগী করে তাদের যোগ্য স্থানে আসীন করেছে। এখনো প্রতিষ্ঠানটি সোনাগাজীর আমিরাবাদ, সোনাগাজী সদর, মতিগঞ্জ ইউনিয়নের শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। শিক্ষার আধুনিকায়নে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা আমাদের রয়েছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়েই সকল শিক্ষক, গভর্নিং বডি ও অভিভাবকদের শিক্ষার মানোন্নয়নে মা সমাবেশ, অভিভাবক সমাবেশ, প্রথম সারির শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশেষ আয়োজন সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে থাকি।
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আজিজুল হক হিরণ জানায়, সোনাপুর হাজী এমএস হক উচ্চ বিদ্যালয় পূর্বের তুলনায় শিক্ষা ক্ষেত্রে সাফল্যের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। এই অঞ্চলের শিক্ষা ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী অবদান রাখছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানের এখন সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন হচ্ছে বাউন্ডারি প্রাচীর নির্মাণ। আশা করি এবিষয়টি সমাধান হলে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নিরাপত্তা বলযের পাশাপাশি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে।
সম্পাদনা:আরএইচ/এএইচআর