মোহাম্মদ সোহাগ মিয়া (১২)। যে বয়সে হাতে বই-খাতা থাকার কথা সে হাতে ফ্লাক্স নিয়ে শহরের এ গলি ও গলি ঘুরে চা বিক্রি করে বড়ায় সে। পরিবারের সাত সদস্যের গ্লানি টানতে টানতে বড্ড ক্লান্ত বাবা লোকমান মিয়া। তিনিও শহরের চা বিক্রি করেন। মাও অন্যের বাসায় কাজ করে। কিন্তু সে টাকায় সংসার চলেনা। বাধ্য হয়েই হাতে চায়ের ফ্লাক্স তুলে নেয় সোহাগ।
সোমবার এ প্রতিবেদকের কাছে সংসারের অভাব-অভিযোগ তুলে ধরে সোহাগ। বলতে ভুল করেনি তার লেখাপড়ার কথাও। সমাজের আর পাঁচ-দশটা ছেলের মত তারও স্কুলে যেতে ইচ্ছে করে। সোহাগ জানায়, দিনভর চা বিক্রি করে বাপ-বেটা মিলে যা আয় হয় তার সবটুকু দিয়ে সংসার চলতেই হিমশিম খেতে হয়। প্রতিদিন কত কাপ চা বিক্রি হয় জানতে চাইলে সে জানায়, সে এক থেকে দেড় ফ্লাক্স (১ ফ্লাক্সে ৩০কাপ) চা বিক্রি করে সে। অন্যদিকে তার পিতা লোকমান মিয়া দুই ফ্লাক্স চা বিক্রি করে। টাকার হিসাবে বাপ-বেটা মিলে ৪শ থেকে ৫শ টাকার চা বিক্রি করে। ভাই বোনের কথা জিজ্ঞেস করলে সোহাগ জানায়, দু’ বোন স্কুলে পড়ে। সে জানায়, আমি লেখাপড়া না করতে পারলেও আমার ভাই-বোনদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করে গড়ে তুলব। কথা বলতে বলতে হঠাৎ সোহাগের বাবা লোকমান মিয়াকে পেয়ে যাই। সে জানায়, তার ইচ্ছা ছেলে-মেয়েদর লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলতে। কিন্তু দারিদ্রর কষাঘাতে বাধ্য হয়েই ছেলের হাতে চায়ের ফ্লাক্স তুলে দিতে বাধ্য হয়েছি।
নদী ভাঙনের কবলে সর্বশান্ত লোকমান মিয়া চাকরীর খোঁজে কয়েক বছর আগে পরিবার নিয়ে ফেনী আসেন। শহরের কদলগাজী এলাকায় ১ হাজার ৫শ টাকায় একটি দো-চালা টিন সেড়ের ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ী কিশোরগঞ্জের আশুগঞ্জ উপজেলার আবদুল্লাহপুর গ্রামে।
সম্পাদনা: আরএইচ/এসএইচডি