সরষের তেলের বহুমুখী উপকারীতা • নতুন ফেনীনতুন ফেনী সরষের তেলের বহুমুখী উপকারীতা • নতুন ফেনী
 ফেনী |
১১ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরষের তেলের বহুমুখী উপকারীতা

লাইফস্টাইল ডেস্কলাইফস্টাইল ডেস্ক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ, ১৬ নভেম্বর ২০২০

সরষের তেল তো শুধু রান্নাতেই নয়, আরও কাজে আসে বাঙালির জীবনে। রাঁধাবাড়া, ত্বকের যত্ন, ঘর আলোকিত করা- সবেতেই সরষের তেলের অপার মহিমা! এতই তার সুখ্যাতি যে লোকে চুরি করেও নিয়ে যায়! বিশেষ করে শীতের দিনে!
কেন না, রূপচর্চায় সরষের তেল যত কাজে আসে, তেমনটা আর কিছু দিয়েই হয় না! শরীরকে ভিতর থেকে যেমন, বাইরে থেকেও তেমন পুষ্টি জোগায় সরষের তেল। তাই এই শীতে যদি সুন্দর থাকতে হয়, কী ভাবে কাজে লাগাতে হবে সরষের তেলকে?

দেশের সব ঘরেই রান্না হয় সরষের তেলে। মাছ ভাজা থেকে কষা মাংস, সরষের তেল না হলে ঠিক যেন রান্নার স্বাদ ওঠে না। তবে সরষের তেলের জাদু শুধু রান্নাঘরেই আটকে নেই। সরষের তেল আপনার ত্বক ও চুলের জন্যও যথেষ্ট উপকারী। এমনকী আপনার দাঁত ঝকঝক করতেও সরষের তেলের জুড়ি মেলা ভার। মেক-আপ তুলতে সরষের তেল দারুণ উপকারী। দেখে নিন সেগুলি কী কী-

শুকনো ত্বকের হাতিয়ার:-
অলিভ অয়েল নয়, এই শীতে হাতে তুলে নিন সরষের তেলের বাটি। গোসলের আধঘণ্টা আগে সারা গায়ে ভাল করে তেল মাসাজ করুন। দেখবেন, দিনে দিনে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ছে। পাশাপাশি, এই শীতে ত্বক থাকবে তরতাজাও। কোথাও যাওয়ার আগে হালকা করে এক-দু ফোঁটা সরষের তেল যদি মুখে মেখে, তার পরে সাবান দিয়ে মুখ ধুয়ে নেন, দেখবেন তা ফেসিয়ালের কাজ করছে। সরষের তেল আমাদের ঠান্ডার সমস্যাতেও কাজে লাগে। সামান্য রসুন বাটা দিয়ে সরষের তেল মিশিয়ে বুকে ও পিঠে মালিশ করলে আরাম লাগবে। এ ছাড়া স্টিমিং পদ্ধতিতে গরম পানির সঙ্গে সরষের তেলের ঝাঁঝ নিলেও সর্দি-কাশি থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যায়।

রূপটানের আগে:-
মেক-আপকে যদি নিখুঁত করতে চান, তবে আগে মুখে একটু সরষের তেল মাসাজ করে নিন। তার পর তা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলে মেক-আপ শুরু করুন। এতে ত্বক নরম, কোমল হয়ে থাকবে। ফাউন্ডেশনও বসবে সুন্দর ভাবে। ব্রণ, ফুসকুড়ি হলে রোজ কয়েক ফোঁটা সরষের তেল নিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাল্কা ম্যাসেজ করুন। এরফলে ত্বক ভালো থাকবে ও ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়বে। রোজ মুখে সরষের তেল ম্যাসেজ করলে ট্যান কমবে। কালো ছোপ দূর হবে। সপ্তাহে অন্তত তিনদিন সরষের তেলে বেসন বা ময়দা, এক চা-চামচ দই ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে লাগান। ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সরষের তেল ন্যাচারাল ক্লিনসার হিসেবে কাজ করে। মেক-আপ তুলতে সরষের তেল দারুণ উপকারী। শীতে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়? চামড়া খসখস করে। তাহলে অতি অবশ্যই মুখে ও সারা শরীরে স্নানের আগে ভালো করে সরষের তেল মাখুন। কয়েক মিনিট রেখে স্নান করুন।

তেলে চুল তাজা:-
চুল শনের মতো শুকনো? কোনও চাপ নেই! ভরসা ওই সরষের তেল! নিয়মিত ভাবে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি ব্রহ্মতালুতে সরষের তেল মাসাজ করেন এবং পরের দিন সকালে হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নেন, তবে চুল নরম থাকবে। হবে চকচকেও। পাশাপাশি, খুসকির মতো সমস্যাও দূর হবে যা শীতকালে বেশি করে জাঁকিয়ে বসে। হেয়ার স্টাইলিংয়ের জন্য কোনও কেমিক্যাল প্রোডাক্ট লাগিয়েছেন। চুলকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে হলে মাথায় গরম সরষের তেল ম্যাসেজ করুন। চুলের রুক্ষতা দূর হবে। আবার সরষের তেলের সঙ্গে মেথি ও জবা ফুলের পাপড়ি একসঙ্গে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন। পরে সেই তেল দিয়ে চুল মাসাজ করলে চুলের রুক্ষ ভাব কেটে গিয়ে যেমন নরম হবে, তেমনই চুল হবে উজ্জ্বল। একই ভাবে খুসকি ও স্কাল্পের চুলকানি কমাতে সরষের তেল উপকারী। সরষের তেল ও নারকেল তেল সম পরিমাণে মিশিয়ে চুলে মাসাজ করতে হবে। তোয়ালে দিয়ে চুল মুড়ে অন্তত দু’ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। শেষে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। এ ভাবে সপ্তাহে কয়েক বার সরষের তেল ব্যবহার করলেই খুসকি কমে যাবে।

ঠোঁটের যত্ন নিন:-
শীতের শুকনো, ফাটা ঠোঁটের যত্ন নিতে সরষের তেলের জুড়ি মেলা ভার! রোজ রাতে ঘুমাতো যাওয়ার আগে যদি নাভিতে একটু সরষের তেল দেন, দেখবেন ঠোঁট থাকছে আগের চেয়েও বেশি নরম! পাশাপাশি, শীতের ফাটা গোড়ালিকে সুন্দর চেহারায় ফিরিয়ে আনতেও সরষের তেলের মাসাজের বিকল্প নেই!

ফর্সা রঙের চাবিকাঠি:-
সরষের তেলের নিয়মিত মাসাজ এমনিতেই গায়ের রং উজ্জ্বল করে! পাশাপাশি আরও একটু যত্ন নিতে চাইলে বেসন, দই, কয়েক ফোঁটা পাতিলেবুর রস আর কয়েক ফোঁটা সরষের তেল মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরি করুন। কিছুক্ষণ তা ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। মুখে বা সারা শরীরেই। আধ ঘণ্টা মতো বাদে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে দেখবেন, রং ফর্সা হতে শুরু করেছে।

দাঁত ঝকঝক:-
সরষের তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা পাতিলেবুর রস ও এক চিমটে নুন মিশিয়ে দাঁত মাজুন। দাঁত ঝকঝক করবে। দাঁতের যন্ত্রণা, হলদে ভাব কাটিয়ে সাদা রং ফিরিয়ে আনতে আধ চামচ সরষের তেল, এক চামচ হলুদ ও আধ চামচ নুন মিশিয়ে দাঁতে ঘষুন। রেহাই পাবেন দাঁতের সমস্যা থেকে।

ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়:-
সরষের তেলে ভাল পরিমাণে মোনোস্যাচিউরেটেড ও পলিআনস্যাচিউরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, ওমেগা থ্রি ও সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। ফলে ইসকেমিক হার্ট ডিসিজ হওয়ার প্রবণতা কমে যায় প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ। সরষের তেল শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল লেভেল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে কার্ডিয়ো ভাস্কুলার ডিসিজের প্রবণতাও কমে। প্রাকৃতিক উদ্দীপক হওয়ার জন্য সরষের তেল খিদে বাড়ানো ও দ্রুত হজমে সাহায্য করে।
সম্পাদনা:আরএইচ/এইচআর

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.