লেখক:আব্দুর রহমান আব্দুল্লাহ
||
_______________________
আমি রোহিঙ্গা-আমি যে মুসলমান-অসহায় এক মানব শিশু!
আমি রক্তাক্ত-আমি নির্যাতিত-আমি হারিয়েছি স্নেহের মূল!
আমি সর্বহারা-আমি দিশেহারা-আমি ভেসেছিলাম রক্ত গঙ্গার নদে!
আমি বুঝিনি কভু জীবন কাকে বলে-বুঝেছি আজ অসহায়ত্বের ফলে!
আমি হয়েছিলাম স্বজনহীন-হারিয়েছিলাম পরিবার!
আমি হেঁটেছি কত পথ-করেছি অন্বেষণ কত মানব ভবন-অবশেষে হয়েছিলাম বেকারার!
আমি হয়েছি সর্বহারা-নিধন হয়েছে আপনজন- আমি ভেসেছিলাম নাফ নদের নলে!
করেছে নির্যাতন-নির্মম অত্যাচার-সেই নরপশুদের দলে!
রক্তাক্ত দেহ নিয়ে-সহস্র মাইল পথ ঘুরে-পাইনি তবু একটুকু আশ্রয়!
দয়ার সুমহান যিনি-প্রভু দয়ময় তিনি-অবশেষে খুঁজে দিলেন আমায় মানবপ্রেমি এক মমতার সাগর- মানবতার তরী-মুক্তির দিশারী-সত্যের প্রহরি- অসহায়দের স্বজন-দয়ার বাহার তিনি নিঃস্বার্থ তাহার মানব হৃদয়।
আমি ছিলাম রক্তাক্ত-ছিলাম নির্যাতিত!ছিলাম আমি অসবল-দেহে ছিল আমার রক্তের নল!
আমি ছিলাম নিপিড়িত-ছিলাম আমি ক্ষুধার্ত- দেহে ছিলনা শক্তির বল!
আমি ছিলাম স্বজন হারা-ছিলাম আমি সর্বহারা- হারিয়েছে আপনজন-হারিয়েছি আমি স্নেহের বাঁধন!
আমি হারিয়েছি জন্মদাতা পিতার মুখ-হারিয়েছি জগৎ জননী মায়ের সুখ-আমায় সর্বহারা করেছে সেই নরপশুদের দল।
ঘুরছি আমি পথের নীড়ে-কত মানবের ভিড়ে- ঘুচে যাচ্ছে নিঃশ্বাস!
হঠাৎ দেখি আমি-সেই মহামনিষী,মানবপ্রেমির হাতছানি-কাছে ডেকে নিয়ে আমায় বুকে দিলেন নিবাস।
আমার রক্তে বেষ্টিত দেহ-কাছে টানে নাতো কেহ- আঘাত করে আমার রক্তে রাঙা কায়ায়!
মমতার পরশ তিনি-কাছে টেনে নিলেন যিনি-এতো দিনে জড়িয়েছি নিজেকে কোনো এক স্নেহের মায়ায়।
আমি সর্বহারা-হারিয়েছে সব আমার,ছিল যত আপন যারা!
অজানায় দিয়েছি পারি-মনে ছিল সংশয় যদি কোথাও যাই বা হারি! ছিল মনে আকাঙ্ক্ষা-পাব কী তবু কোনো নিঃস্বার্থ মানব সেবকের দেখা?
কত-শত পথ ঘুরি-কত মানবের নীড়ে দিয়েছি পারি! অবশেষে পেয়েছি খুঁজে এক মহান মানবপ্রেমি,মমতাময় মুক্তির দিশারী।
তিনি আমায় ডেকে নিলেন পাশে-রক্তাক্ত দেহ তবু,হৃদয় আলিঙ্গনে নিলেন মিশে। ‘মুছে দিলেন নয়নের অশ্রুঝরা ঝরনার নল-হৃদয়ে তখন পেয়েছিলাম একটুকু আশ্রয়ের বল।
কোলে টেনে নিলেন আমায়-রঞ্জিত হলেন তিনি রক্ত মাখা জামায়। করিলেন আমায় যত আদর-ভুলবো না সেথা তবু থাকবে অমর।
চেয়েছি যতবার সেই নুরানি বদনে! একেছি ছবি ততবার হৃদয়ের আলিঙ্গনে। একবার নয়! বারবার নয়ন যেন দেখতে চায় সেই বদন! মমতার সমরাজ্য সেথার নুরানি হাসিতে, হৃদয়ের বিষাদ যত-সব হয়ে যায় নিধন।
আমি একবার নয়-দেখেছি বারবার সেই মুখ, আমার দু’টি নয়ন জুড়ে। বুঝেছি তখন-আমি যেন সব আবার পেয়েছি ফিরে।
করিলেন সেবা আমার-আদর করিলেন বারেবার! ঠাঁই দিলেন আমায় মমতার নীড়ে!
রয়েছি সেথায় আমি-খুঁজি তাহায় দিবস-যামী!
বারবার ফিরে এসো তুমি মানবতার টানে।
_